বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ০৫:২০ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
হেমন্তে রাজবাড়ীতে আগ্রাসী রূপে পদ্মা

হেমন্তে রাজবাড়ীতে আগ্রাসী রূপে পদ্মা

??????????????????????????

স্বদেশ ডেস্ক:

রাজবাড়ীতে অসময়ে পার ভাঙছে পদ্মা। হেমন্তকালে পদ্মার এই আগ্রাসী রূপ আগে কেউ দেখেনি। ভাঙছে ফসলি জমি, ঘরবাড়ি, খেলার মাঠসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান।

গত কয়েকদিনে পদ্মার পেটে গেছে ছয় শ’ বিঘার বেশি ফসলি জমি। ভাঙন দেখা দিয়েছে শহর প্রতিরক্ষা বাঁধেও। হুমকিতে রয়েছে বাড়ি-ঘরসহ নানা স্থাপনা। গুরুত্ব অনুযায়ী ভাঙনকবলিত এলাকায় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পাউবো।

সোমবার বিকেলে ভাঙনকবলিত রাজবাড়ী সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়নের বড়চর বেনীনগর, কালিতলা, চর সিলিমপুর এলাকা ঘুরে দেখা যায়, নদীতে প্রচুর স্রোত। বড় চরবেনিনগর এলাকায় পদ্মা নদীর মাঝামাঝি এলাকায় চর জেগেছে। ফলে মূল স্রোত পদ্মার ডান দিক দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আর নদীতে প্রচুর স্রোত থাকায় নদীর ভাঙ্গন ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। বরচর বেনিনগর, কালিতলা, চরসিলিমপুর গ্রামের তিন কিলোমিটার এলাকাজুড়ে চলছে এই ভাঙন। এরই মধ্যে এসব এলাকার ছয় শ’ বিঘার বেশি কৃষি জমি নদীতে বিলীন হয়েছে। এছাড়া লালগোলা এলাকায় তীররক্ষা প্রকল্পের ৮০ মিটার ব্লক ধসে গেছে।

স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, গত কয়েকদিন ধরে এভাবে ভাঙন চললেও এখনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি পানি উন্নয়ন বোর্ড। দ্রুত ভাঙন রোধ করা সম্ভব না হলে অনেক ঘর-বাড়ি ও নানা স্থাপনা পদ্মায় চলে যাবে। অনেকে এই ভাঙনের একটি কারণ হিসেবে দায়ী করছে পদ্মা থেকে বালি উত্তোলন। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, উজানে অসময়ে বন্যায় পদ্মায় পানি প্রবাহ বেড়েছে। সেই সাথে পানি কমায় ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে ফেলা হচ্ছে জিও ব্যাগ।

নদীর পারে ক্ষেত থেকে সবজি তুলতে আসা খোদেজা বেগম বলেন, আমাদের ছয় বিঘা জমি নদীতে চলে গেছে। জমিতে পালং শাক, উস্তে, বেগুন ও টমেটো চাষ করেছিলাম। অল্প একটু জমি আছে সেটুকুও রাতে মনে হয় থাকবে না। এভাবে অসময়ে রাজবাড়ীর পদ্মায় অগ্রাসী রূপে ভাঙ্গতে থাকলে আমাদের বাড়ি-ঘরও থাকবে না।

ছুরাপ বেপারী বলেন, আমাদের বাড়ি ছাড়া মাঠের জমি সবই শেষ। এখন কী করে খাব জানি না। একদিকে পদ্মায় বালি তুলছে, অন্যদিকে নদী ভাঙছে। বালি তোলা বন্ধ হলে ভাঙন কিছুটা কমবে। আর ভাঙন দেখা দিলে তখন দুই বস্তা ব্যাগ ফেলে চলে যায়। তাতে কিছুই হয় না। ভাঙন ঠেকাতে হলে বড় উদ্যোগ নিতে হবে।

রাজবাড়ী নাগরিক সমাজের সভাপতি জ্যোতি শংকর ঝন্টু বলেন, রাজবাড়ীর চার উপজেলা মিলে ৬৫ কিলোমিটার পদ্মার পার রাজবাড়ী। প্রতিবছর কম-বেশি নদী ভাঙ্গন হয়। তবে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় না। আমরা শুনেছি রাতের বেলা নদীর কিনার থেকে বালি তোলা হয়। ভাঙনের জন্য বালি উত্তোলনও একটি কারণ। আর যেভাবে নদী ভাঙ্গছে তাতে রাজবাড়ী শহরই হুমকিতে। জেলাকে পদ্মার গ্রাস থেকে বাঁচাতে হলে শুধু বালুর বস্তায় হবে না। বড় বাজেটের মাধ্যমে স্থায়ীভাবে ভাঙ্গন রোধে কাজ করতে হবে।

রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আরিফুর রহমান অংকুর বলেন, শহররক্ষা প্রকল্পের যে স্থানে ভেঙেছিল, সেখানে বস্তা ফেলা হয়েছে। নতুন করে আর ভাঙবে না। তবে মিজানপুর ইউনিয়নের যে স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে সেখানে আমরা কাজের অনুমতি চেয়েছি। অনুমতি পেলেই কাজ শুরু করব।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877